এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২১ মে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য তানজিদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে গ্রেফতার করে
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পোস্টমাস্টারকে গুলি করে ৫০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২১ মে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য তানজিদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার হওয়ার পর ২২ মে আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও পুলিশ জানিয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রূপম কুমার দাশ তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন এবং তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। জবানবন্দিতে ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নাম বের হয়ে এসেছে বলে পুলিশ জানা।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালিহাতী উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ওরফে সজীব ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বলে জবানবন্দিতে জানান জিসান।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে কালিহাতী পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর-এর ৫০ লাখ টাকা তুলে অফিসের রানার রফিকুল ইসলামকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে নিজের অফিসের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন বল্লা পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার মুজিবর রহমান। পথিমধ্যে মোটরসাইকেলে করে আসা ৩ ব্যক্তি তাদের পথ রোধ করে গুলি চালিয়ে ৫০ লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় পোস্ট অফিস পরিদর্শক শেখ হোসেন জোবায়ের বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ওই দিনই কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন জিসান ও সজীবের সহযোগী রিপন বল্লা পোস্ট অফিস এলাকায় অবস্থান নেন এবং পোস্টমাস্টারকে অনুসরণ করতে থাকেন। তিনি টাকা নিয়ে বের হলে সজীবকে ফোনে জানিয়ে দেন জিসান। কিছুক্ষণ পরেই টাকা ছিনতাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে বলে ফোনে জিসানকে জানান সজীব। ওইদিন সন্ধ্যায় জিসানকে ভাগের ২ লাখ টাকা দেন সজীব।
এদিকে নিজেদের সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যারাই জড়িত আছে এ ঘটনায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ ও টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগ নেতারা।
কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলম মোল্লা বলেন, “জিসানকে বহিস্কার করার প্রক্রিয়া চলছে।”
জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল জানান, জিসানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাকে বহিস্কারের জন্য কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, “মামলাটি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। জড়িতদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যহত আছে।”
মতামত দিন