`ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর পাশে তৈরি করা বাঁশের মাচা দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার মানুষদের। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বৈঠকে আলোচনা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না'
গাইবান্ধা-কালিরবাজার সড়কের গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি এলাকার সেতুটি প্রায় তিনবছর ধরে বিধ্বস্ত হয়ে আছে। সাময়িক চলাচলের জন্য সেই বিধ্বস্ত সেতুর পাশে বাঁশের মাচা দেওয়া হয়েছিল, তারও দুই ভেঙ্গে গেছে। তারপরও নতুন সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই রাতে ফুলছড়ি উপজেলার সিংড়িয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ফলে সেই সময় ওই পানির আঘাতে এই সেতুটি বিধ্বস্ত হয়, যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়। পরে ২০১৮ সালের জুন মাসে ক্ষতিগ্রস্ত এই সেতুর পাশে একটি বাঁশের মাচা তৈরি করা হয়।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের বোয়ালি গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবদুস সোবহান বলেন, গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে কালিরবাজারস্থ ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের দূরত্ব মাত্র ৬ কিলোমিটার। ফলে আগে সেতুর উপর দিয়ে দুই উপজেলার মানুষ খুব সহজেই চলাচল করতে পারতেন। যানবাহনও চলাচল করতো। কিন্তু সেতুটি বিধ্বস্ত হওয়ায় যানবাহন চলাচল তিনবছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এখন মাচার উপর দিয়ে শুধু মানুষ, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল কোনোমতো চলাচল করতে পারছে। তারপরও বর্তমানে মাচাটির দুই পাশ ভেঙে যাওয়ায় চলাচল করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
একই গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকেই জেলা শহর থেকে মালামাল পরিবহন করতে পারছি না। বাঁশের মাচার বাঁধনগুলো ঢিলা হয়ে গেছে। মাচাতে মালবোঝাই ভ্যান উঠলে ভেঙ্গে যাওয়ার আতংকে থাকি।
ফুলছড়ি উপজেলার কালিরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকেই ১০ কিলোমিটার ঘুরে কঞ্চিপাড়া হয়ে জেলা শহরে যেতে হচ্ছে। ফলে পরিবহন খরচ বেশি পড়ছে। এ কারণে স্থানীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বোয়ালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজেদ উদ্দিন খান বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর পাশে তৈরি করা বাঁশের মাচা দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার মানুষদের। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বৈঠকে আলোচনা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।”
ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ বলেন, “ওই সড়কটি দিয়ে আমার উপজেলার অসংখ্য মানুষ জেলা শহরে যাতায়াত করেন। কিন্তু তারপরও এখানে নতুন সেতু নির্মাণে গাফিলতি করা হচ্ছে।”
গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ মোল্লা গাফলতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সাতমাস আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে এখানে একটি নতুন সেতু তৈরির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে সেঁতু নির্মাণ করা হবে।”
মতামত দিন