নতুন এই প্রকল্পের মূল চীনা বিশেষজ্ঞরা এইমুহূর্তে চীনে আটকা পড়ে আছেন। ২৩ সদস্যের এই চীনা দলটি বছরের শুরুতে চীনের নববর্ষ উদযাপনে নিজেদের দেশে যাওয়ার পর আর বাংলাদেশে ফিরতে পারেনি
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে গিয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম উচ্চগতিসম্পন্ন রেলওয়ে প্রকল্পের কাজ।
নতুন এই প্রকল্পের মূল চীনা বিশেষজ্ঞরা এইমুহূর্তে চীনে আটকা পড়ে আছেন। ২৩ সদস্যের এই চীনা দলটি বছরের শুরুতে চীনের নববর্ষ উদযাপনে নিজেদের দেশে যাওয়ার পর আর বাংলাদেশে ফিরতে পারেনি।
চীন অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার দাবি করেছিলো। সেসময় তারা বাংলাদেশে আসার জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে করোনাভাইরাস সৃষ্ট কোভিড-১৯কে মহামারি ঘোষণা করায় তাদের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হয়। বর্তমানে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে ৫৪জন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও ৬জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
চীনা বিশেষজ্ঞদের পরিকল্পনা ছিলো এপ্রিলের মধ্যেই পুরো প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত করে সেটি মন্ত্রণালয়ে জমা দেবেন কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সেটি একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
প্রকল্পটির পরিচালক মো. কামরুল আহসান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “চীনে গিয়ে তারা আটকা পড়ে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
তিনি জানান, ৭০% নকশা প্রায় করা হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় হয়ত প্রকল্পের সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, চায়না রেলওয়ে ডিজাইন কর্পোরেশন (সিআরডিসি) ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান মজুমদার এন্টারপ্রাইজ যৌথভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম উচ্চগতির রেলওয়ে প্রকল্পের নকশা নির্ধারণের কাজটি করছে।
চীনা প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে গতবছর এই প্রকল্পে ১১০.৬০ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পটি চালু হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে মাত্র ৫৬ মিনিট সময় লাগবে। তবে, পথিমধ্যে ৪টি স্টেশনে থামার ব্যবস্থা থাকলে সেক্ষেত্রে ৭৩ মিনিট সময় লাগবে। যদিও, প্রস্তাবিত প্রকল্পে মোট ছয়টি স্টেশনের উল্লেখ রয়েছে। সেগুলো, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনি, পাহাড়তলী ও চট্টগ্রাম।
এছাড়া, মোট ২২৭ কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছুতে ঘণ্টায় ৩শ’ কিলোমিটার গতিতে চলা ট্রেনগুলো দৈনিক ৫০হাজার যাত্রী বহনে সক্ষম।
উচ্চগতির রেলপথটি ডাবল ট্র্যাকের ওপর থাকবে এবং বেশিরভাগই এলিভেটেড থাকবে। এতে লাইনের লেভেল ক্রসিং ও অন্যান্য প্রবেশ পয়েন্টগুলিতে উচ্চগতি নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশের রেলওয়ের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এটা ইলেক্ট্রিক ট্যাকশনে পরিচালিত হবে। বর্তমানে, বাংলাদেশ রেলওয়ে সারাদেশে ৩হাজার কিলোমিটার নেটওয়ার্কে ৩৬০টি যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনা করে। তবে এই ট্রেনগুলোর কোনটিই ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করতে পারে না।
মতামত দিন