১৭ বছর পর মাকে দেখে আবেগে ভাষা হারিয়ে ফেলেন ছেলে
১৭ বছর আগে ছোট মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন বকুল বালা। সেই থেকে নিরুদ্দেশ তিনি। ছেলে ঠাকুর কৃষ্ণ হাওলাদার অনেক চেষ্টা করেও মাকে খুঁজে পাননি। অবশেষে রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পটুয়াখালী শহরের সবুজবাগ এলাকার তিতাস মোড়ে ১৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজে পান ছেলে ঠাকুর কৃষ্ণ হাওলাদার।
বকুল বালার বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার তালবাড়ীয়া গ্রামে। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। রবিবার সকালে তিতাস মোড় এলাকায় বকুল বালাকে দেখে সন্দেহ নাতি রিপন চন্দ্র হাওলাদার। তিনি সাথে সাথে বাবাকে জানান। ছেলের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঠাকুর কৃষ্ণ হাওলাদার ছুটে যান পটুয়াখালী শহরে। সেখানে পৌঁছে মাকে চিনতে পেরে ভাষা হারিয়ে ফেলেন তিনি।
তিনি জানান, "আমার ছোট বোন আলো রানিকে বাপের বাড়ি ফেলে পালিয়ে যায় তার স্বামী। স্বামীকে খুঁজতে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হয় আলো। আর আলোকে খুঁজতে বেরিয়ে ১৭ বছর আগে নিরুদ্দেশ হন মা।"
তিনি আরও বলেন, "মা নিখোঁজ হওয়ার পরে বিভিন্ন যায়গায় খুজেছি কিন্তু পাইনি। আজ তাকে খুজে পেয়ে আমি খুব খুশি। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।"
যে ছাপড়া ঘরে বকুল বালা এতোদিন ছিলেন তার পাশেই অবস্থিত দোকানের মালিক জানান, "আমার দোকানের পাশেই একটি ছাপড়া ঘরে থাকতেন তিনি। যে যা দিতেন তাই খেতেন। আমিও তাকে মাঝে মাঝে খাবার দিতাম। তবে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। আজ অনেক বছরপরে মা ও ছেলের দেখা হয়েছে। এমন ঘটনায় আমরাও অত্যন্ত খুশী হয়েছি।"
৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজল বরণ দাস জানান, "৪ বছর আগে বৃষ্টির সময় তিতাস মোড় এলাকায় আসেন তিনি। তারপর আমরা সবাই মিলে একটি ছাপড়া ঘর তুলে দেই। সেখানেই তিনি থাকতেন। পরে বৃদ্ধার জন্য বস্ত্র ও কম্বলের ব্যবস্থা করা হয়। এলাকার লোকজন তাকে খাবার দিতেন। আজ তাকে সন্তানেরা খুঁজে পেয়ে নিয়ে গেছেন। এটা আমাদের সবাইকে অত্যন্ত আনন্দিত করেছে।"
মতামত দিন