'সরকার দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স জারি করেছে, তাহলে এখানে (জাবি) দুর্নীতি চলছে কীভাবে'
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে মুখোশ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। মিছিলে তদন্তের নামে “দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসের মদদদাতাদের কর্তৃত্ব মানি না” বলে উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৫ টায় “দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর” ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি বের হয়। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে প্রতিবাদী সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, “আজ আমরা এই সন্ত্রাসী হামলার মদদদাতা ও দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের জন্য লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না। তাই আজ আমরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছিল করছি। আমাদের দাবি এ লজ্জা থেকে জাহাঙ্গীরনগরকে, আমাদেরকে মুক্তি দিন। এই উপাচার্যের দুর্নীতির তদন্ত করে অপসারণ করুন। সরকার দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স জারি করেছে, তাহলে এখানে (জাবি) দুর্নীতি চলছে কীভাবে?”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার আহ্বায়ক শোভন রহমান বলেন, “এই উপাচার্য অবৈধভাবে ৮৬ লাখ টাকা খরচ করে নিজের কার্যালয় সাজিয়েছেন। পদে আসীন থাকার জন্য ছাত্রলীগকে টাকা দিয়েছেন। আমরা এমন চাটুকার-দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের অপসারণ চাই।”
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, “শিক্ষকরা যখন দুর্নীতি করেন, কর্মচারীর হাতে যখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত হতে হয় তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্ধযাত্রা শুরু হয়। জাবিতেও এখন এই অবস্থা চলছে। উপাচার্য একের পর এক দুর্নীতি করলেও অপসৃত হচ্ছেন না। আমাদের উপাচার্য দুর্নীতিবাজ, এটা আমাদের জন্য লজ্জার।”
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দীন রুনু, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শাকিলউজ্জামানসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা থেকে আবাসিক হলের কাজের শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে এক কোটি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে এক কোটিসহ মোট দুই কোটি টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠার পর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। গত চার মাস যাবৎ এ উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তারা।
মতামত দিন