‘জাতীয় সংসদ সদস্যরা রিকশায় করে গণভবনে যাবেন না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিকশায় করে যাবেন না। তাই সংসদ নেতাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অনুরোধ করবো এমপিদের গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে সহায়তা দেওয়ার’
সংসদ সদস্যদের গাড়ি কিনতে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
সোমবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যকালে তিনি এ দাবি জানান।
সংসদ সদস্য হিসেবে শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনে তা হস্তান্তরের কারণে দুদকের মামলায় সম্প্রতি হারুনুর রশীদকে নিম্ন আদালত সাজা দেন। পরে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন।
হারুনুর রশীদ বলেন, “ওয়ান-ইলেভেনর সময় মামলা হয়েছে। আমার নামে দুর্নীতি মামলা না থাকায় শুল্কমুক্ত গাড়ি নিয়ে মামলা হয়। নিম্ন আদালতে আমার সাজা হলে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছি।”
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তিনি অসাধারণ একটি পদক্ষেপ নিয়েছেন, দেশব্যাপী দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ঠিক এরকম একটি মুহূর্তে আমার সাজা হলো। ব্যাপকভাবে তা প্রচার হলো। সারাদেশে একটা পারসেপশন তৈরি হলো বিএনপির এমপি বলেই হারুনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালত অতি অল্প সময়ে জামিন পাই। আপিল বিভাগও সেই জামিন বহাল রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “রায়টি যখন হলো আমার এলাকায় দেখলাম কিছু ব্যক্তি আনন্দ উৎসব করলো, মিষ্টি বিতরণ করলো। কিন্তু সারাদেশের মানুষ আমার জন্য দোয়া করেছে। মুক্ত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা আমার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
সংসদ সদস্য হিসেবে কেনা গুল্কমুক্ত গাড়ি হস্তান্তরে জেল-জরিমানার সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সংসদ সদস্য হিসেবে আনা কোনও গাড়ি হস্তান্তর করা হলে সেক্ষেত্রে সমুদয় শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এখানে জরিমানা বা জেলের সুযোগ নেই। আমি আশা করি, উচ্চ আদালত আমাকে এ বিষয়ে বিবেচনায় নিয়ে আসবে।”
সংসদ সদস্য হিসেবে চার মাস আগেই গাড়ি কেনার অনুমতি পেলেও টাকা না থাকায় কিনতে পারছে না দাবি করে হারুনুর রশিদ বলেন, “ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত বিশ্বে ১ কোটি টাকা নগদ দিয়ে গাড়ি কেনে না। তারা ব্যাংক ঋণের সুবিধা পায়। কারাগারে থাকা অবস্থায় দেখলাম, সচিবদের গাড়ি কেনার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পত্রিকায় নিউজ হয়েছে সচিবরা গাড়ি অপব্যবহার করছেন। জাতীয় সংসদ সদস্যরা রিকশায় করে গণভবনে যাবেন না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিকশায় করে যাবেন না। তাই সংসদ নেতাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অনুরোধ করবো এমপিদের গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে সহায়তা দেওয়ার। যাতে করে ৫ বছর ব্যবহার করার পর গাড়িটা বিক্রি করে অন্তত মূলধনটা ফিরে পাওয়া যায়।” এমপিদের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
মতামত দিন