গভীররাতে দরজা খুলতে না চাইলে তারা মামলার ব্যাপারে কথা বলবেন বলে জানায়। তখন আমি দরজা খুলে দেই
যশোরের শার্শায় দু’সন্তানের জননী (৩০) এক গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
মঙ্গলবার সকালে স্বপ্রণোদিত হয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে ওই গৃহবধূ যশোর জেনারেল হাসপাতালে আসলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, “আমার স্বামী একসময় চোরাচালানিদের পণ্য বহন করতেন। কিন্তু এখন কৃষিকাজ করেন। ৯ দিন আগে (২৫ আগস্ট) শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুল আমাদের বাড়ি থেকে স্বামীকে ধরে নিয়ে যান। এসআই খায়রুল আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় তাকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে তাকে চালান দেওয়া হয়। আমি থানা পুলিশকেও বিষয়টি জানিয়েছি- কিন্তু তারা আমার কথা শোনেননি।”
তিনি অভিযোগ করেন, “ঘটনার ৯দিন পর কাল রাতে (২ সেপ্টেম্বর, রাত আড়াইটার দিকে) এসআই খায়রুল, সোর্স কামারুল এবং গ্রামের আরও তিন-চার চারজন এসে আমাকে ডাকাডাকি করে। অতরাতে দরজা খুলতে না চাইলে তারা মামলার ব্যাপারে কথা বলবেন বলে জানায়। তখন আমি দরজা খুলে দেই। দারোগা খায়রুল ফের ৫০ হাজার টাকা দাবি করে বলেন- তাহলে ৫৪ ধারায় মামলা করে দেবেন। টাকা না দেওয়া নিয়ে দারোগার সঙ্গে আমার ঝগড়াও হয়।”
তিনি বলেন, “একপর্যায়ে খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে দু’জন আমাকে ঘরের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করে চলে যায়।”
তিনি জানান, তারা চলে যাওয়ার পর ঘটনা প্রতিবেশীদের জানালে তারা মামলা করার পরামর্শ দেন। মামলা করতে হলে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করাতে হবে। এ কারণে তিনি থানায় না গিয়ে সোজা যশোর জেনারেল হাসপাতালে যান।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহম্মেদ জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই নারী জরুরি বিভাগে যান। তিনি যখন শোনেন ওই নারী পুলিশ কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছেন, তখন তার সঙ্গে কথা বলা হয়। তাকে জানানো হয়, এ ধরনের পরীক্ষা পুলিশের মাধ্যমে না এলে করা যায় না। এরপর পুলিশকে জানানো হলে কোতয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তাকে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যান।
যোগাযোগ করা হলে যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, “অভিযোগটি খুবই গুরুতর। আমরা গুরুত্ব সহকারেই দেখছি। ঘটনার সবিস্তার জানতে আমাদের সিনিয়র লেভেলের কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। প্রাথমকি তদন্তে যা আসবে, আইন অনুযায়ী আমরা সে ব্যবস্থাই নেবো। পুলিশ বলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
পুলিশ সুপার বলেন, “ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহম্মেদ বলেন, “ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে ভিক্টিমের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।”
মতামত দিন