সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেয়নি পুলিশ।
বগুড়ায় আহম্মেদ সাব্বির (৩০) নামে এক ব্যবসায়ীকে পুলিশ লাইনসের অফিসার্স মেসে ডেকে লাঠিপেটা করার অভিযোগ উঠেছে এএসপি কুদরত-ই-খুদা শুভ'র বিরুদ্ধে।
রবিবার (১২ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। সোমবার জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্ত এএসপি শুভ বগুড়া থেকে বেতন-ভাতা পেলেও তিনি বর্তমানে সেখানে কর্মরত নন।
নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী আহম্মেদ সাব্বিরের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া পুলিশকে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ করে আসছিলেন। সম্প্রতি তিনি মগ সাপ্লাই বাবদ এক লাখ ৪৩ হাজার টাকার একটি বিল তিন কিস্তিতে পান। বিল পাওয়ার পর তিনি (সাব্বির) মগগুলো সরবরাহকারী ব্যবসায়ী লেবুকে ৯০ হাজার টাকা দেন। অবশিষ্ট টাকা দিতে দেরি হওয়ায় ব্যবসায়ী লেবু এএসপি কুদরত-ই-খুদা শুভ'র কাছে নালিশ করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত এএসপি শুভ গত ১২ মে রাত ১১টার দিকে সাব্বির ও লেবুকে পুলিশ লাইনসে ডেকে পাঠান। সেখানে সাব্বির লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করে পাওনা টাকা কয়েকদিন পরে দেওয়া হবে বলে জানান।
এতে এএসপি শুভ ক্ষুব্ধ হয়ে গার্ড ও ড্রাইভারের সহায়তায় সাব্বিরকে লাঠিপেটা করেন। মারধরে সাব্বির অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পুলিশ লাইনস থেকে বাইরে এনে একটি রিকশায় তুলে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, ওই রাতেই তিনি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। থানা থেকে এসপির কাছে লিখিত অভিযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়। সে মোতাবেক সোমবার দুপুরে এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন সাব্বির।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, সাব্বির তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু অভিযুক্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে এসপি সাহেবের কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
ব্যবসায়ী সাব্বির হোসেন আরও অভিযোগ করেন, আগের একটি প্রাপ্য বিল নিয়ে কিছুদিন আগে এএসপি শুভ'র বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছিলেন। যার প্রতিশোধ নিতেই তাকে ব্যক্তিগত আক্রোশে লাঠিপেটা করা হয়েছে। তিনি ভবিষ্যতে পুলিশি হয়রানির আশংকা করছেন।
এ প্রসঙ্গে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা সাংবাদিকদের বলেন, ওই ব্যবসায়ী আমার সঙ্গে দেখা করে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাকে লিখিতভাবে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, এএসপি কুদরত-ই-খুদা শুভ আরডিএ’তে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে আছেন। তাই তাকে ফোনে পাওয়া যাবে না।
মতামত দিন