২০১০ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ চার আসামীর বিরুদ্ধে আনা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় আজ।
এ উপলক্ষ্যে রাজধানীর পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য। সেখানে যান চলাচল ও সাধারণের চলাচলে কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে। কারাগারের প্রধান সড়ক কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তল্লাশি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
রাজধানীর লালবাগ আঞ্চলের পুলিশের ডিসি ইব্রাহিম খান জানান, " রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।"
উল্লেখ্য, রাজধানীর ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর স্থাপিত পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান গত ১৬ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে আদেশ দেয়। ওইদিন আদালতের আদেশে বলা হয়, "গত আড়াই বছর ধরে এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির দিন দেয়া হয়েছে। কিন্তু বারবার সময় দেয়ার পরও আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক শুনানিতে অংশ নেননি। তাই বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২৯ অক্টোবর এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হলো।" আদেশে বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, "খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বারবার সময় আবেদন করে কালক্ষেপণ করেছেন। তারা বিচারিক কোনো কাজে অংশ নেন না, কিন্তু, জামিন বাড়ানোর সময় হলেই তারা জামিনের আবেদন করেন।"
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলার আদেশের জন্য গত ১৪ অক্টোবর সময়ের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করে গত ১৬ অক্টোবর আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও জামিন বাতিল, রায়ের তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে আদেশ দেয়।
উল্লেখ্য, ওইদিনই হাইকোর্ট হাইকোর্টে আনা খালেদা জিয়ার রিভিশন আবেদন খারিজ করে আদেশ দেয়। ফলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারের আদেশ বহাল থাকে। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে খালেদা জিয়া। আজ ২৯ অক্টোবর সকালে এ আবেদনও খারিজ করে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
এ মামলায় চার আসামির মধ্যে খালেদা জিয়া, জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান বর্তমানে কারাগারে আছেন। আরেক আসামি হারিছ চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক।
এদিকে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুদকের পক্ষে আইনজীবী আদালতে একটি আবেদন পেশ করে জানান, যেহেতু আসামীপক্ষ শুনানি করতে আগ্রহী নয়, তাই মামলাটির রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হোক। এর আগে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে কি-না, এ বিষয়ে সেদিন মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে ২০ সেপ্টেম্বর আদেশ দেয় আদালত। আদেশে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলা চলবে বলে বলা দেয়া হয়। এ আদেশ হাইকোর্টেও বহাল থাকে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ৩২ জন সাক্ষ্য দেয়। আসামীপক্ষ তাদের জেরা করে।
মতামত দিন