গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বাড়িয়ে দেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ফলে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাত লাখ মানুষ।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘ ও মিয়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়ন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের ৭৩ তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে জাতিসংঘ ও মিয়ানমারের মধ্যকার চুক্তির বাস্তবায়ন দেখতে চাই। রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমার থেকে শুরু হয়েছে, এর সমাধানের পথও মিয়ানমার থেকে খুঁজে বের করতে হবে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার ব্যাপারে চুপ থাকতে পারি না, একে এড়াতেও পারি না।’
মিয়ানমার কথা দিয়ে কথা রাখে না-অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবসময় মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু বাস্তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কোনও ভূমিকা পালন করে না।’
সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। তারা আশ্রয় শিবিরে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে আছে। যদিও তাদের ভালো রাখার জন্য বাংলাদেশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তাদের জন্য খাবার, কাপড়-চোপড়, স্বাস্থ্যসুরক্ষা, শিশু যত্ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বাড়িয়ে দেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ফলে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাত লাখ মানুষ।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি হয়। গত ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।
মতামত দিন