বিকেলে খেলা শেষে প্রায় ৪টার দিকে ছয়জন কিশোর ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার ঘর্মাক্ত জার্সি পরেই মাতামুহুরী নদীতে সাঁতার কাটতে যায়।সে সময় নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে গভীর হওয়ায় তারা ডুবে যায়।
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের ঠিক আর একদিন বাকি। আর এসময়েই ফুটবলকে ঘিরেই ঘটে গেল আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা।
থাই কিশোর ফুটবলারদের প্লাবিত গুহা থেকে উদ্ধারের ঘটনার সপ্তাহ না পেরোতেই বাংলাদেশে মাতামুহুরী নদীতে ডুবে মারা গেছে পাঁচ জন কিশোর ফুটবলার।
বাংলাদেশের কক্সবাজারে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মাঝে একটি প্রীতি ফুটবলের পর পাঁচ জন কিশোর নদীতে সাঁতার কাটতে গিয়ে ডুবে মারা যায় বলে রোববার জানিয়েছেন পুলিশ।
পুলিশ এবং স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেলে চকোরিয়া গ্রামার বিদ্যালয়ের ২২ জন শিক্ষার্থী একটি প্রীতি ফুটবলের আয়োজন করে। খেলার উদ্দেশ্যে তারা নিজেদের বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি দল ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার সমর্থক দলে ভাগ করে নেয়।
বিকেলে খেলা শেষে প্রায় ৪টার দিকে ছয়জন কিশোর ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার ঘর্মাক্ত জার্সি পরেই মাতামুহুরী নদীতে সাঁতার কাটতে যায়।সে সময় নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে গভীর হওয়ায় তারা ডুবে যায়।
স্থানীয়রা কোনভাবে তাদের মধ্যে মাত্র একজনকে বাঁচাতে সক্ষম হয়। জরুরি সেবার মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ একটি উদ্ধার অভিযানের ব্যবস্থা করা হলেও বাকিদের বাঁচানোর চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, উদ্ধারকারীদের শত চেষ্টার পরেও মাতামুহুরী নদী থেকে শনিবার রাত ৭টা নাগাদ মহাসড়কের সাথে লাগোয়া ব্রিজের কাছে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। রাত প্রায় ১টাড় দিকে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত পাঁচ কিশোরেরা হল অষ্টম শ্রেণীর আমিনুল হোসেইন, ফারহান, সোহরাব হোসাইন, এবং দশম শ্রেণীর তূর্যয় ভট্টাচার্য ও সাইদ।
রোববার অনুষ্ঠিত তাদের জানাজায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকাটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্বকাপের এই সময়ে ফুটবল পাগল এই কিশোরদের অপমৃত্যু যেন হতবিহবল করে ফেলেছে পুরো এলাকাবাসীকে।
বিশ্বকাপের মৌসুমে বাংলাদেশের রাস্তা-পথ-ঘাট-ছাদ সবকিছু লাতিন আমেরিকান এই দুই দলের পতাকায় ছেয়ে যায়। ফুটবলকে ঘিরে এতো মহাসমারোহের মাঝে প্রীতি ম্যাচের পর এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হোক কি দুই দলের সমর্থকদের সংঘর্ষে হতাহতের অপ্রীতিকর ঘটনা-কোনটাই কাঙ্ক্ষিত নয়।
মতামত দিন